সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম: সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নে চন্দ্র বাহিনীর তাণ্ডবে এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। কামালপুর গ্রামের মৃত প্যারীমোহন বৈষ্ণবের ছেলে পার্থ কুমার বৈষ্ণব ওরফে চন্দ্র ও তার বাহিনীর লোকজন চরনারচর বাজারে মাইকিং করে সভা আহ্বান করে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য ও সংশ্লিষ্টদের অশ্লীল মন্তব্যসহ হুমকি-ধমকি প্রদান করে। এছাড়াও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীদেরকে নাজেহাল করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চন্দ্র ও তার বাহিনীর লোকজন।
পার্থ কুমার বৈষ্ণব (চন্দ্র) ও তার অনুসারীদের হুমকি-ধমকিতে প্রাণভয়ে ভীত হয়ে নিরাপত্তা চেয়ে প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারি ইতিমধ্যেই দিরাই থানায় জিডি করেছেন। ওই কুচক্রী মহলের হাত থেকে বিদ্যালয়কে রক্ষা করতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (০৭ জুন) সকাল ১১টায় স্থানীয় প্রেসক্লাব কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও চরনারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি সুমন রায় চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধান শিক্ষক চন্দন কুমার চৌধুরী, কমিটির সদস্য অনিল চন্দ্র দাস, সঞ্জু রায়, ইউপি সদস্য সত্যবান বৈষ্ণব, ইউপি সদস্য চিত্তরঞ্জন সূত্রধর, শিক্ষিকা শোভনা ভট্টাচার্য্য ও অফিস সহকারি বিজিত রায়।
লিখিত বক্তব্যে সুমন রায় চৌধুরী জানান- “গ্রামের কৃতিসন্তান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রতন কুমার রায়ের সার্বিক সহযোগিতায় বিদ্যালয় নির্মাণের প্রস্তাব এলে আমি ও আমার পরিবার বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য ৫ কেয়ার জায়গা দান করি। এই ভূমিতেই চরনারচর এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সুনামের সহিত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। বিদ্যালয়ের রাস্তা সম্প্রসারণের সুবিধার্থে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সর্বসম্মতিক্রমে প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নামফলকটি স্থানান্তরিত করে সুবিধাজনক স্থানে স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু নামফলক স্থানান্তরের বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের অপচেষ্টায় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা বিরোধিতাকারী চন্দ্র ও তার লোকজন সভা আহ্বান করে প্রকাশ্যে আমি ও আমার বাবা প্রয়াত রবীন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরীকে (নিশি বাবু) ডাকাত ও রাজাকার বলে গালিগালাজ করে আমাদের পরিবারের লোকজনকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।
বিগত বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে পার্থ বৈষ্ণব ওরফে চন্দ্রের প্যানেল পরাজিত হওয়ার পর থেকেই বিদ্যালয়ের কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করার জন্য সে বিভিন্ন সময়ে নানান কৌশল অবলম্বন ও অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে।
বিগত দিনে আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করলেও বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। কামালপুর গ্রামের জনৈক মানিক মিয়ার জায়গা দখল করে তাতে তার মায়ের নামে সমাধি-মন্দির নির্মাণ করে নেয়। এ বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে আমাদের নেতা প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে ‘ঘুষখোর’ বলতেও কার্পণ্য করেনি ঐ মহলের কথিত নেতা পার্থ বৈষ্ণব (চন্দ্র)। বিগত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তথা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মনোনিত প্রার্থীকে ফেল করানোর জন্য জনৈক চিত্তদাসকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে তার জন্য আদাজল খেয়ে মাঠে কাজ করেন পার্থ বৈষ্ণবের নেতৃত্বাধিন ঐ চক্র। অবশেষে নৌকা প্রতিক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হতে পারেনি।
শুধু তাই নয়- নৌকা প্রতিকে যাতে ভোটাররা ভোট দিতে না-পারে সেজন্য ভোটকেন্দ্রে গিয়ে গোলমাল করার সময় পুলিশ তাকে হাতেনাতে ধরে ফেললে পুলিশের গায়ে হাত তুলতেও পিছপা হয়নি এই পার্থ বৈষ্ণব।”
সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রেখে সহযোগিতা কামনা করে এই পার্থ বৈষ্ণবকে (চন্দ্র) শক্ত হাতে প্রতিহত করার আহ্বান জানানো হয়।